পৃথিবীর বুকে বয়স্কতম গেকো, বয়স যাদের ৬০ বছরের বেশি! নিউজিল্যান্ডের একটি দ্বীপে পাওয়া গেছে এই বিরল দৃষ্টান্ত।
নিউজিল্যান্ডের একটি ছোট দ্বীপে, বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন বিরল প্রজাতির দুটি গেকো, যাদের বয়স শুনলে সত্যিই অবাক হতে হয়। এদের মধ্যে একটির বয়স ৬৪ বছর, আর অপরটির ৬০ বছর। বিজ্ঞানীরা এদের নাম দিয়েছেন অ্যান্টনিয়েট এবং ব্রুসি-বেবি। গেকো সাধারণত এত দীর্ঘ জীবন ধারণ করে না, তাই এই আবিষ্কার সত্যিই অসাধারণ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই গেকোদের খুঁজে পাওয়াটা বেশ কঠিন ছিল। কারণ এরা আকারে ছোট এবং এদের চামড়া বয়স্ক মানুষের মতো ঝুলে গেছে। এদের চিহ্নিত করার মূল কারণ ছিল, ১৯৬০-এর দশকে টনি হুইটেকার নামের এক প্রকৃতিবিদ গেকোদের পায়ে বিশেষ চিহ্ন দিয়েছিলেন। সেই চিহ্নগুলো থেকেই গবেষকরা অ্যান্টনিয়েট ও ব্রুসি-বেবিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।
এই গেকোদের দীর্ঘ জীবনের রহস্য লুকিয়ে আছে মোটুনু দ্বীপে। এই দ্বীপটি শিকারী প্রাণী থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ। বাইরের কোনো প্রাণী এখানে গেকোদের ক্ষতি করতে পারে না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গেকোদের এত দিন বাঁচার মূল কারণ এটিই।
মেরিকে লেটিনক নামের একজন গবেষক জানিয়েছেন, “এই গেকোদের আবিষ্কার আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এদের বয়স আমাদের থেকেও বেশি, অথচ তারা এখনো টিকে আছে, এটা সত্যিই অসাধারণ।” তিনি আরও বলেন, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর তারা দ্বীপে যান এবং গেকোদের খুঁজে বের করেন।
নিউজিল্যান্ডের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ এখন গেকোদের জন্য আরও নিরাপদ স্থান তৈরি করতে চাইছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, শিকারী প্রাণীগুলোকে দ্বীপ থেকে দূরে রাখা। তবে বিজ্ঞানীরা এটাও মনে করেন, গেকোদের জীবনচক্র আরও ভালোভাবে বুঝতে হলে গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে।
আমাদের দেশেও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সুন্দরবনসহ বিভিন্ন স্থানে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রক্ষার জন্য সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। গেকোদের এই বিরল দৃষ্টান্ত আমাদের প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরও বেশি মনোযোগী হতে উৎসাহিত করে।
তথ্য সূত্র: CNN