ডুবে যাওয়া যুদ্ধজাহাজে গাড়ির রহস্য! হতবাক বিজ্ঞানীরা!

যুদ্ধকালীন একটি ডুবে যাওয়া যুদ্ধজাহাজে ১৯৪০ দশকের একটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা দেখে গবেষকরা হতবাক। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ডুবে যাওয়া একটি মার্কিন নৌবাহিনীর বিমানবাহী রণতরীর ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধানে গিয়ে এই চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার করেছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা।

সম্প্রতি, ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA)-এর একটি দল গভীর সমুদ্রে গবেষণা চালানোর সময় ইউএসএস ইয়র্কটাউন (USS Yorktown) নামের রণতরীটির হ্যাঙ্গারে ১৯৪০-৪১ সালের একটি ফোর্ড সুপার ডিলাক্স গাড়ি খুঁজে পান।

১৯৪২ সালের জুনে মিডওয়ে দ্বীপে জাপানি সাবমেরিনের হামলায় এই ইয়র্কটাউন ডুবে গিয়েছিল। গবেষকরা জানান, গাড়িটির সামনের অংশে ‘শিপ সার্ভিস – নেভি’ কথাটি লেখা ছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, রণতরীটি বিদেশি বন্দরে ভেড়ার সময় রিয়ার অ্যাডমিরাল ফ্র্যাঙ্ক জ্যাক ফ্লেচার অথবা ক্যাপ্টেন এলিয়ট বাকমাস্টারের মতো কর্মকর্তাদের ব্যবহারের জন্য হয়তো এটি রাখা হয়েছিল।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই গাড়ির বিষয়টি বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। কারণ, পার্ল হারবারে মেরামতের পর যখন ইয়র্কটাউন মিডওয়ে যুদ্ধের জন্য যাত্রা শুরু করে, তখনো গাড়িটি হ্যাঙ্গারেই ছিল।

সাধারণত, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জাহাজের ওজন কমাতে অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে যুদ্ধ শুরুর আগে কেন গাড়িটি ফেলা হয়নি, তা নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে।

গাড়িটির পাশাপাশি, বিজ্ঞানীরা জাহাজের ভেতরে বিশাল আকারের হাতে আঁকা একটি দেয়ালচিত্রও খুঁজে পেয়েছেন। দেয়ালচিত্রটিতে ইয়র্কটাউনের সমুদ্রযাত্রার বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

ছবিটির আকার প্রায় ৪২ ফুট বাই ১২ ফুট। এছাড়া, ডুবুরিরা জাহাজের ভেতরে থাকা অন্তত তিনটি বিমানের সন্ধান পেয়েছেন, যার মধ্যে একটি ছিল ডগলাস এসবিডি ডন্টলেস ডুবন্ত বোমারু বিমান, যার বোমা এখনো অক্ষত অবস্থায় ছিল।

গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপটি এখন বিভিন্ন সামুদ্রিক জীবের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। তারা একটি নতুন প্রজাতির লাল জেলিফিশও খুঁজে পেয়েছেন।

এই আবিষ্কারগুলি গভীর সমুদ্রের পরিবেশ সময়ের সঙ্গে কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, তা বুঝতে সাহায্য করবে।

তথ্য সূত্র: NOAA Ocean Exploration।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *