৮০ বছর পর! জল থেকে ফিরলেন, ২য় বিশ্বযুদ্ধের নায়কেরা!

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রশান্ত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হওয়া একটি মার্কিন বোমারু বিমানের ১১ জন নাবিকের মধ্যে চারজনের দেহাবশেষ অবশেষে তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। প্রায় ৮০ বছর আগে হওয়া এই ঘটনার স্মৃতি আজও অম্লান, আর স্বজন হারানোর বেদনা আজও তাজা।

১৯৪৪ সালের ১১ই মার্চ, ‘হেভেন ক্যান ওয়েট’ নামক একটি বি-২৪ বোমারু বিমান, জাপানি সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইয়ের সময় নিউ গিনি দ্বীপের কাছে বিধ্বস্ত হয়। বিমানের সকল ১১ জন ক্রু নিহত হন।

সমুদ্রের গভীরে তাঁদের দেহাবশেষ উদ্ধারের অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

কিন্তু পরিবারের সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে, তাঁদের মধ্যে চারজনের দেহাবশেষ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রয়াত ক্রু সদস্য, ২য় লেফটেন্যান্ট থমাস কেলির এক আত্মীয়।

গভীর সমুদ্রের তলদেশে, প্রায় ২০০ ফুট গভীরে ডুবুরি দল অভিযান চালিয়ে তাঁদের দেহাবশেষ খুঁজে বের করে।

এই চারজনের মধ্যে ছিলেন রেডিও অপারেটর সার্জেন্ট ইউজিন ডারিগান। তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে নিউইয়র্কের ওয়াপিংগার্স ফলস-এ, যেখানে তাঁর স্ত্রী ও শিশুপুত্র ছিলেন।

দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট থমাস কেলির শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় ক্যালিফোর্নিয়ার লিভারমোরে। এছাড়া, প্রথম লেফটেন্যান্ট হার্বার্ট টেনিসন এবং দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট ডোনাল্ড শেপিকের দেহাবশেষও তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং আগামী মাসগুলোতে তাঁদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

ডারিগানের স্ত্রী ফ্লোরেন্স, স্বামীর মৃত্যুর পর পুনরায় বিয়ে করেন। কিন্তু স্বামীর ছবি ও তাঁর মৃত্যুসংবাদ সম্বলিত টেলিগ্রামটি তিনি সযতনে রেখেছিলেন।

লেফটেন্যান্ট টেনিসনের স্ত্রী জীন, ৯৬ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন এবং তিনি বিশ্বাস করতেন তাঁর স্বামী একদিন না একদিন অবশ্যই ফিরে আসবেন।

পরিবারগুলির জন্য এই খবর ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। এই মানুষগুলো তাঁদের প্রিয়জনদের হারানোর পর, তাঁদের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছেন।

তাঁদের এই ত্যাগ ও কষ্টের কথা সকলের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *