সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এর মালিক ইলন মাস্ক প্রায়শই তার অনুসারীদের চিরাচরিত গণমাধ্যমের পরিবর্তে ‘নাগরিক সাংবাদিকতা’ অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেন। তাঁর মতে, মূলধারার গণমাধ্যম অনেক সময়ই ভুল তথ্য পরিবেশন করে।
তবে, মাস্কের এই ধারণার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন ‘এক্স’-এর সাবেক জনসংযোগ প্রধান ডেভ হেইনিঞ্জগার। সিএনএন-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরাসরি বলেছেন, সামাজিক মাধ্যম সাংবাদিকতার বিকল্প হতে পারে না।
ডেভ হেইনিঞ্জগার, যিনি ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ‘এক্স’-এর জনসংযোগ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমানে একটি জনসংযোগ সংস্থার প্রেসিডেন্ট। তিনি মনে করেন, সামাজিক মাধ্যমে তথ্যের অবাধ প্রবাহ প্রকৃত সাংবাদিকতার স্থান পূরণ করতে পারে না।
হেইনিঞ্জগার জোর দিয়ে বলেন, সামাজিক মাধ্যম ভালো সাংবাদিকতার ক্ষেত্র হতে পারে, যেখানে অনেক ভালো সাংবাদিক কাজ করছেন। কিন্তু প্ল্যাটফর্মগুলো নিজেরাই সাংবাদিকতার ধারাকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না।
হেইনিঞ্জগারের মতে, সামাজিক মাধ্যমে প্রায়ই অসম্পূর্ণ বা ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, মাস্ক নিজেই একবার একটি ভুয়া সংবাদপত্রের শিরোনাম শেয়ার করেছিলেন, যেখানে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে বিক্ষোভকারীদের জন্য ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছিল।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্বারা তৈরি ভিডিওর উত্থানের ফলে এখন সহজেই ঘটনাগুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করা সম্ভব হচ্ছে, যা আরো বেশি ভুল তথ্য ছড়াতে সাহায্য করে।
হেইনিঞ্জগার সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, নির্ভরযোগ্য তথ্য খুঁজে বের করতে এবং তা যাচাই করার জন্য গণমাধ্যম সাক্ষরতা অপরিহার্য।
তিনি আরও মনে করেন, তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর নির্ভর করা উচিত নয়। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত তাদের নিজস্ব ফিড তৈরি করা এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুসরণ করা।
বর্তমানে সমাজে ভুল তথ্যের বিস্তার একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। ডেভ হেইনিঞ্জগার মনে করেন, এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের কাজটি আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তাঁর মতে, সাংবাদিকদের তৈরি করা সংবাদ আমাদের সমাজে সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করতে সাহায্য করে। এই ক্ষেত্রে, গণমাধ্যম সাক্ষরতার গুরুত্ব অপরিসীম।
তথ্যসূত্র: সিএনএন।