মানবদেহে প্রাণী অঙ্গ প্রতিস্থাপন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন এক গবেষণা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে যেখানে জেনেটিকালি পরিবর্তিত শূকর থেকে অঙ্গ নিয়ে মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।
এই পদ্ধতিটি ‘জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন’ নামে পরিচিত। এটি মূলত সেই সব রোগীদের জন্য আশার আলো, যারা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য দীর্ঘকাল ধরে অপেক্ষা করছেন।
বর্তমানে, বাংলাদেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বিশাল ফারাক বিদ্যমান। অনেক রোগী সঠিক সময়ে অঙ্গ না পাওয়ার কারণে মারা যান।
এমন পরিস্থিতিতে, জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন সফল হলে, তা জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদমাধ্যম সিএনএন (CNN) এই বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেছে।
“ডক্টর সঞ্জয় গুপ্তা রিপোর্টস: অ্যানিমেল ফার্ম” (Dr. Sanjay Gupta Reports: Animal Pharm) নামের এই প্রামাণ্যচিত্রটি আগামী রবিবার, সম্ভবত বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী সোমবার সকাল ৬টায় প্রচারিত হবে।
এই প্রামাণ্যচিত্রে জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে। কিভাবে জেনেটিক পরিবর্তনের মাধ্যমে শূকরের অঙ্গ মানুষের শরীরের জন্য উপযোগী করে তোলা হচ্ছে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
তবে, জেনোট্রান্সপ্লান্টেশনের ক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। প্রাণী অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপন করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
এছাড়া, প্রাণীর শরীর থেকে মানুষের শরীরে ভাইরাস বা জীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনাও থাকে। তাই, এই ধরনের প্রতিস্থাপনের আগে এইসব ঝুঁকিগুলো বিবেচনা করা জরুরি।
বাংলাদেশেও বর্তমানে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অঙ্গ সংগ্রহের অভাব, উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব এবং জনসচেতনতার ঘাটতির কারণে অনেক রোগী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।
এমতাবস্থায়, জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন যদি সফল হয়, তবে তা শুধু একটি চিকিৎসা পদ্ধতিই হবে না, বরং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং বাংলাদেশের রোগীদের জন্য জীবন বাঁচানোর এক নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
তথ্য সূত্র: CNN