চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বেইজিংয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার আগের দিনই চীনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে তারা দু’জন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন।
এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দুই নেতা প্রায় ছয় বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসেন। এর আগে ২০১৯ সালে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে শি জিনপিংয়ের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় তাদের মধ্যে সর্বশেষ সাক্ষাৎ হয়েছিল।
সামরিক কুচকাওয়াজে শি জিনপিং, কিম জং উন এবং ভ্লাদিমির পুতিনকে একসঙ্গে দেখা যায়। বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবং বিশ্ব ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনে এই তিন নেতার ঐক্যবদ্ধ অবস্থান একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে।
কুচকাওয়াজে ইরান, পাকিস্তান ও বেলারুশের মতো ২৬টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সামরিক কুচকাওয়াজটি ছিল চীনের সামরিক শক্তির এক বিশাল প্রদর্শনী। একইসঙ্গে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বিদ্যমান আন্তর্জাতিক জোটগুলোতে পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, চীনকে একটি বিকল্প বিশ্বনেতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
কুচকাওয়াজের পরে কিম জং উন এবং ভ্লাদিমির পুতিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন, যেখানে তারা দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পুতিন ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের লড়াইয়ের প্রশংসা করেন এবং কিম জং উনকে রাশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান। বিদায় নেওয়ার সময় পুতিন কিমকে আলিঙ্গন করেন।
এই বৈঠক এবং সামরিক কুচকাওয়াজ, উভয়ই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন দিকে মোড় নিতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন