চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের স্মরণে রাশিয়া সফরে গিয়ে বন্ধুপ্রতিম ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। পশ্চিমা বিশ্বের একতরফা নীতি এবং আধিপত্য বিস্তারের বিরুদ্ধে চীন যে রাশিয়ার সঙ্গে রয়েছে, সে কথা স্পষ্ট করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মস্কোতে পৌঁছেই শি জিনপিং দু’দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার কথা বলেন।
পুতিন এই সফরকে স্বাগত জানিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ হলো নব্য-নাৎসিবাদ ও সামরিকবাদের বিরুদ্ধে এক নতুন লড়াই।
চীন ও রাশিয়ার বন্ধুত্বকে তিনি ঐতিহাসিক সত্যের প্রতি সম্মান জানানো এবং যুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার একটি সম্মিলিত প্রয়াস হিসেবে বর্ণনা করেন।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে দেশগুলোকে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সেনা পাঠাতে নিষেধ করেছে। তাদের বক্তব্য, এতে কিছু দেশের নিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘিত হবে।
যদিও চীন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান দেখাচ্ছে, কিয়েভের দাবি, তারা রাশিয়ার পক্ষ হয়ে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে তাদের নাগরিকদের পাঠিয়েছে।
শি জিনপিং জানান, চীন ও রাশিয়া যৌথভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসকে সমর্থন করবে এবং জাতিসংঘের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করবে।
এছাড়াও, চীন, রাশিয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষার কথাও তিনি উল্লেখ করেন, যা একটি ‘সমতাপূর্ণ, সুশৃঙ্খল, বহুমাত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন’-এর দিকে ইঙ্গিত করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি চুক্তি করার চেষ্টা করছেন।
এমন পরিস্থিতিতে বেইজিং কিছুটা উদ্বিগ্ন।
শি জিনপিংয়ের এই সফরকালে দুই দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০২৩ সালে স্বাক্ষরিত ‘সীমাহীন’ কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করবে।
এর মধ্যে ‘পাওয়ার অব সাইবেরিয়া ২’ গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
এই প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় তা বিলম্বিত হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, অর্থনৈতিক চাপ উভয় পক্ষকে একটি সমাধানে আসতে উৎসাহিত করতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা