ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সম্প্রতি উত্তর ইসরায়েলে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি তারা ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে এবং এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বুধবার ভোররাতের দিকে হাইফা, ক্রায়োত এবং গ্যালিলি সমুদ্রের পশ্চিমের অন্যান্য এলাকায় সাইরেন বাজানো হয়।
গত অক্টোবর মাস থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই হুতি বিদ্রোহীরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। এই বিদ্রোহীরা মূলত ইরান সমর্থিত এবং তারা ইয়েমেনের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে।
ইসরায়েলও এর আগে কয়েকবার হুতিদের লক্ষ্য করে ইয়েমেনের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে, এমনকি রাজধানী সানাতেও।
যদিও হুতিরা তাৎক্ষণিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে তাদের পক্ষ থেকে সাধারণত হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা বা দিন পর দায় স্বীকার করা হয়। এর মধ্যেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে।
গত ১৫ই মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার সকালেও তারা হামলা চালায়। হুতিরা জানিয়েছে, তারা হোদাইদাহ, মারিব ও সা’দা প্রদেশে মার্কিন বিমান হামলার শিকার হয়েছে।
মারিবে, তারা টেলিযোগাযোগ সরঞ্জামকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে, যা আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল।
অন্যদিকে, হুতিরা তাদের দেশের উপর দিয়ে ওড়া মার্কিন ড্রোনগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হুতি সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারে মঙ্গলবার রাতে জানান, তারা ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিম হাজ্জাহ প্রদেশের আকাশে একটি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
এই এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন তৈরি করতে প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয় এবং এটি ৪০,০০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় উড়তে পারে ও ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আকাশে থাকতে সক্ষম।
মার্কিন সামরিক বাহিনী এবং সিআইএ দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তান, ইরাক ও বর্তমানে ইয়েমেনে এই ড্রোন ব্যবহার করছে। হুতিদের দাবি, তারা গত এক দশকে ইয়েমেন যুদ্ধে ২৬টি এমকিউ-৯ ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনী ড্রোন ভূপাতিত করার খবর নিশ্চিত করেছে, তবে তারা বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মার্কিন সামরিক বাহিনী বলছে, তারা লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক নৌ-চলাচল এবং ইসরায়েলের ওপর হামলা বন্ধ করতে হুতি “সন্ত্রাসীদের” লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
লোহিত সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথ এবং এর নিরাপত্তা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত জরুরি।
এই ঘটনার জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষ করে, লোহিত সাগরের অস্থিরতার কারণে পণ্য পরিবহনে জটিলতা দেখা দিতে পারে, যা বাণিজ্য খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা