Headlines

১০০ বছর বাঁচতে চান? দই কি তবে আসল চাবিকাঠি?

বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি নিয়ে মানুষের আগ্রহ সবসময়ই অনেক। সুস্থ জীবন যাপন এবং দীর্ঘকাল বাঁচার উপায় নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। সম্প্রতি, দীর্ঘায়ু লাভের সম্ভাব্য একটি উপায় নিয়ে গবেষণা হয়েছে, যেখানে দই-এর ভূমিকা বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে।

আসুন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক।

দীর্ঘকাল বেঁচে থাকা মানুষদের নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তারা কিভাবে এত বছর সুস্থ ছিলেন, তাদের জীবনযাত্রার রহস্য কী, এমন নানা প্রশ্ন আমাদের মনে জাগে।

স্পেনের মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ, যিনি ১১৭ বছর বয়সে মারা যান। তার দীর্ঘ জীবনের রহস্য জানতে চাওয়া হলে, একটি সম্ভাব্য উত্তর হলো— দই।

গবেষকদের মতে, মারিয়া ব্রানিয়াস তার জীবনের শেষ কয়েক দশক ধরে প্রতিদিন তিনবার দই খেতেন। তার অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেন যে, তার শরীরে ‘বিফিডোব্যাকটেরিয়াম’ নামক উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ছিল অস্বাভাবিকভাবে বেশি।

এই ব্যাকটেরিয়া দই-এর মাধ্যমে শরীরে বৃদ্ধি করা সম্ভব। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধরনের মাইক্রোবায়োম সুস্থ জীবনযাপনের সম্ভাবনা বাড়ায়।

তবে, শুধু দই খেলেই যে দীর্ঘ জীবন পাওয়া যাবে, তা নয়। ব্রানিয়াসের জীবনযাত্রার আরও অনেক দিক ছিল, যা স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করতেন। তার খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফল, শস্য, শিম, বাদাম ও বীজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়াও, তিনি ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে ছিলেন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতেন।

বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোটাও তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।

তাহলে, দীর্ঘায়ু লাভের ক্ষেত্রে দই-এর ভূমিকা কী? দইয়ে বিদ্যমান ‘ল্যাকটোব্যাসিলাস’ নামক এক ধরনের জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই ব্যাকটেরিয়া দুধকে দইয়ে পরিণত করে। ল্যাকটোব্যাসিলাস আমাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তারা রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুদের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালো মানের দই বাছাই করা জরুরি। বাজারে বিভিন্ন ধরনের দই পাওয়া যায়, তবে এমন দই বেছে নিতে হবে যেখানে জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান।

প্যাকেটজাত, স্বাদযুক্ত এবং অতিরিক্ত রাসায়নিক উপাদান যুক্ত দই এড়িয়ে যাওয়া উচিত। সাধারণ টক দই অথবা ফল ও সামান্য চিনি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, দই নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন। ব্রানিয়াসের মতো, দিনে কয়েকবার দই খেলে অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বজায় থাকে।

পরিশেষে, সুস্থ জীবন যাপন এবং দীর্ঘকাল বাঁচার জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা অপরিহার্য। দই এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হতে পারে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *