**ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে রাশিয়ার ড্রোন হামলার জেরে বাড়ছে নিরাপত্তা উদ্বেগ**
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করেছেন যে, রাশিয়ার ড্রোন হামলা দেশটির বিদ্যুৎ গ্রিডের উপর আঘাত হানছে, যার ফলে চেরনোবিল এবং ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্র, জাপোরিঝিয়ার নিরাপত্তা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সম্প্রতি চালানো ড্রোন হামলায় চেরনোবিলের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় তিন ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল।
এছাড়াও, জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রটিও এখনো পর্যন্ত গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনার স্থান এবং জাপোরিঝিয়া, উভয় স্থানেই বর্তমানে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে, কেন্দ্রগুলোতে ব্যবহৃত জ্বালানি ঠান্ডা করার জন্য অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অপরিহার্য।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলে, তেজস্ক্রিয়তা নিরীক্ষণের ব্যবস্থাও অচল হয়ে যেতে পারে, যা নিরাপত্তা আরও দুর্বল করে দেবে।
জেলেনস্কি জাতিসংঘ এবং এর প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে পারমাণবিক দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে।
তিনি বলেন, “রাশিয়ার যুদ্ধ এবং তাদের শক্তি কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানা, পারমাণবিক নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো—এগুলো একটি বৈশ্বিক হুমকি।”
এদিকে, জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টটি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্ল্যান্টের ছয়টি বন্ধ চুল্লি এবং ব্যবহৃত জ্বালানি ঠান্ডা রাখার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ডিজেল জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, প্ল্যান্টটি সরাসরি কোনো ঝুঁকির মধ্যে না থাকলেও, দ্রুত এটিকে গ্রিডের সাথে সংযুক্ত করা প্রয়োজন।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষই জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টে হামলার জন্য একে অপরকে দায়ী করছে।
জেলেনস্কি রাশিয়ার আর্টিলারি হামলাকে দায়ী করেছেন, অন্যদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ইউক্রেনীয় শেলিংয়ের কথা উল্লেখ করেছেন।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার’ বলছে, জাপোরিঝিয়ার উপর রাশিয়ার দখলদারিত্ব প্ল্যান্টটির নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করে দিয়েছে।
তাদের মতে, রাশিয়া সম্ভবত এই প্ল্যান্টটিকে তাদের নিজস্ব গ্রিডের সাথে যুক্ত করতে চাইছে, যা নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বাড়াবে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস