চীনের স্নুকার ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেন ঝাও জিনটং
ক্রুসিবল। স্নুকারের ইতিহাসে এই নামটি বহু সাফল্যের সাক্ষী। ১৯৮৫ সালে ডেনিস টেলরের নাটকীয় জয় অথবা স্টিফেন হেনরি কিংবা রনি ও’সুলিভানের মতো কিংবদন্তিদের জয় – এই মঞ্চে হওয়া স্মরণীয় মুহূর্তগুলো আজও খেলা প্রেমীদের মনে গেঁথে আছে।
এবার সেই তালিকাতে যুক্ত হলো চীনের ঝাও জিনটংয়ের নাম। মার্ক উইলিয়ামসকে পরাজিত করে তিনি চীনের প্রথম স্নুকার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।
শেফিল্ডের ক্রিুসিবলে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ঝাও ১৮-১২ সেটে হারান অভিজ্ঞ প্রতিপক্ষ উইলিয়ামসকে। এই জয়ের মধ্যে দিয়ে কেবল একজন খেলোয়াড়ের জয়ই হয়নি, বরং চীনের স্নুকার জগতে এসেছে এক নতুন সম্ভাবনা।
বিগত কয়েক বছরে চীনে স্নুকারের জনপ্রিয়তা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। দেশটির বিভিন্ন শহরে এখন তিন লক্ষাধিক স্নুকার হল রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই খেলাটি সেখানে জাতীয় ক্রীড়ার মর্যাদা লাভ করেছে।
ফাইনাল ম্যাচেও চীনের প্রায় ১৫ কোটির বেশি মানুষ খেলাটি উপভোগ করেছেন।
তবে ঝাও জিনটংয়ের এই পথ মসৃণ ছিল না। কয়েক মাস আগেও তিনি ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন।
যদিও তিনি সরাসরি কোনো ম্যাচে ফিক্সিং করেননি, কিন্তু অন্য খেলোয়াড়দের ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ স্বীকার করেছিলেন। সেই কারণে তাকে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে।
তবে সব বাধা পেরিয়ে তিনি ফিরে এসেছেন এবং প্রমাণ করেছেন নিজের দক্ষতা।
ঝাওয়ের এই জয়ে উচ্ছ্বসিত তাঁর সতীর্থ এবং ভক্তরা। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এই জয় চীনের স্নুকারকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অনেকের মতে, ঝাও জিনটংয়ের এই সাফল্য তরুণ প্রজন্মের খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করবে এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক চীনা খেলোয়াড় বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করতে পারবে।
অন্যদিকে, পরাজিত হলেও প্রতিপক্ষ মার্ক উইলিয়ামসও ঝাওয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি মনে করেন, ঝাওয়ের এই জয় স্নুকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাঁর খেলার ধরন তরুণদের কাছে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
উইলিয়ামস আরও বলেন, “ঝাও দুর্দান্ত খেলোয়াড়। তাঁর খেলা দেখে মনে হয়, তিনিই এই খেলার ভবিষ্যৎ তারকা।”
খেলাধুলায় উত্থান-পতন থাকেই। ঝাওয়ের এই সাফল্যে চীনের ক্রীড়াঙ্গনে আনন্দের ঢেউ লেগেছে। তাঁর এই জয় শুধু একটি খেলাই নয়, বরং চীনের ক্রীড়া ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান